গাইবান্ধায় হোক চীনের সহায়তায় ১০০০ শয্যার হাসপাতাল!

needs 1000 bed hospital in gaibandha
proposed 1000-bed hospital in Gaibandha

আমি ব্যক্তিগতভাবে আঞ্চলিকতায় বিশ্বাসী নই। আমি মনেকরি সমগ্র বাংলাদেশটায় আমার এমনকি পুরা পৃথিবীটা আমার বা আমাদের সকলের। তথাপিও, কথায় আছে নেংটির নিচে যেমন কাপড় নেই বা ভর্তার নিচে যেমন তরকারি নেই তেমনি উন্নয়নের দিক থেকে সারাদেশের মধ্যে গাইবান্ধা জেলার মতো আর কোনো জেলা নেই। গাইবান্ধায় ভারী কোন শিল্প কারখানা এমনি কি কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। একটি চিনিকল ছিল সেটাও সরকারী সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ।

জানি না, বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের নীতিনির্ধারনী পর্যায়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা? সামাজিক মাধ্যমে ফেসবুকে জানতে পারলাম দেশে একটি চীনের সহায় এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মিত হচ্ছে।

তা্ই বলতে চাই, গাইবান্ধার মানুষ উন্নত চিকিৎসা সম্মানজনক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রাখে। চীনের সহায়তায় হাজার শয্যার হাসাপাতালটি রংপুরে অথবা দেশের অন্য কোথাও নয়, গাইবান্ধায় চাই!

গাইবান্ধা জেলায় চীনের সহায়তায় হাজার শয্যার আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ হাসাপাতালটি কেন প্রয়োজন তার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে-

১. জমি অধিগ্রহনের প্রয়োজন নেই: 

হাসপাতালের জন্য সরকারের নতুন করে জমি অধিগ্রহনের প্রয়োজন নেই। কারন গাইবান্ধার রামচন্দ্রপুর পরে থাকা সরকারি ৩১ বিঘা জমি রয়েছে।

. স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা:

গাইবান্ধা একটি জনবহুল জেলা হলেও এখানে আধুনিক মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি রয়েছে। অধিকাংশ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর, ঢাকা বা অন্য বড় শহরে পাঠানো হয়, যা সময়সাপেক্ষ ব্যয়বহুল।

. প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা:

গাইবান্ধা প্রতি বছর বন্যা নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব দুর্যোগে আহত অসুস্থ মানুষের জন্য জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন হয়, যেখানে একটি আধুনিক হাসপাতাল বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

. দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উচ্চ হার:

এই জেলায় দরিদ্র স্বল্পআয়ের মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেকেই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেন না। একটি সরকারি, আধুনিক বড় পরিসরের হাসপাতাল হলে তারা বিনামূল্যে বা কম খরচে চিকিৎসা নিতে পারবেন।

. চিকিৎসা জনবল অবকাঠামোর ঘাটতি:

গাইবান্ধার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক, নার্স আধুনিক যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। চীনের সহায়তায় নির্মিত একটি আধুনিক হাসপাতাল এই ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে।

. স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ:

স্বাস্থ্যসেবা শুধু শহরভিত্তিক না রেখে গ্রামীণ পর্যায়ে বিস্তার ঘটানো সময়ের দাবি। গাইবান্ধার মতো প্রত্যন্ত জেলায় আধুনিক হাসপাতাল হলে তা জাতীয়ভাবে স্বাস্থ্যসেবার ভারসাম্য নিশ্চিত করবে।

. উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী রোগীর চাপ কমানো:

ঢাকার হাসপাতালগুলোতে উত্তরাঞ্চল থেকে প্রচুর রোগী আসেন। গাইবান্ধায় আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করলে ঢাকামুখী চিকিৎসা নির্ভরতা কমবে, স্বাস্থ্যখাতে চাপ কমবে এবং অর্থনৈতিক সাশ্রয় হবে।

৮. বেকার যুবদের কর্মসংস্থান:

এই হাসপাতালের সঙ্গে একটি মেডিকেল কলেজ বা নার্সিং ইনস্টিটিউট যুক্ত করা হলে এতে স্বাস্থ্য কর্মসংস্থান ও বেকার যুবদের ক্যারিয়ার বিকাশের সুযোগ তৈরি হবে।

৯. গাইবান্ধা তথা উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন:

গাইবান্ধায় একটি চীনের সহায়তায় নির্মিত আধুনিক হাজার শয্যার হাসপাতাল কেবল একটি চিকিৎসাকেন্দ্রই নয়, বরং এটি এই অঞ্চলের মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্বিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি হতে পারে।

১০. চীন-বাংলাদেশ মৈত্রীর নিদর্শন:

এই হাসপাতাল চীন বাংলাদেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে। উন্নয়ন সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে টেকসই অগ্রগতির সম্ভব হবে।

প্রায় ২৫ লক্ষাধিক মানুষের আবাসভূমি গাইবান্ধা আজও স্বাস্থ্যসেবা সহ সার্বিকভাবে রয়ে গেছে অবহেলিত, বঞ্চিত উপেক্ষিত। একটি আধুনিক সুসজ্জিত হাসপাতাল এখানে শুধু দরকারই নয়, এটি এখন সময়ের দাবী।

আসুন, যার যার অবস্থান থেকে আমরা সবাই চীনের সহায়তায় প্রস্তাবিত এক হাজার শয্যার আধুনিক হাসপাতালটি গাইবান্ধায় স্থাপনের জন্য জোরালো দাবী জানাই।

 

#এক_হাজার_শয্যার_হাসপাতাল_গাইবান্ধায়_চাই #স্বাস্থ্যসেবা_সবার_অধিকার #গাইবান্ধায়_চাই_হাসপাতাল  #GaibandhaNeedsHospital

Post a Comment

0 Comments